
ডেইলি নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম: অভিনয়ের পাশাপাশি কবরী ছিলেন পরিচালক ও প্রযোজক। সর্বশেষ সরকারি অনুদানের একটি সিনেমার নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। নারায়ণগঞ্জের একটি আসন থেকে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। যুক্ত হয়েছিলেন নারী অধিকার সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে।
কবরীর জন্ম ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে। নাম মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হন কবরী। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘জলছবি’, ‘বাহানা’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘ময়নামতি’, ‘অবুঝ মন’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান কবনী। সেখান থেকে পাড়ি জমান ভারতে। কলকাতা গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন কবরী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এরপর নায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে ‘রংবাজ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হন। ফারুকের সঙ্গে তার ‘সারেং বউ’, ‘সুজন সখী’ সিনেমা দুটি কালজয়ী হয়ে আছে। ‘সুজন সখী’ সিনেমাটি ব্যবসায়িকভাবে ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে মাইলফলক।
২০০৫ সালে ‘আয়না’ সিনেমা নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন কবরী। তিনি ২০১৫ সালে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পান। ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রের জন্য পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়া ৫ বার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন এই কিংবদন্তি অবিনেত্রী। ২০২১ সালের ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে কবরী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।