চিনির কেজি এক লাফে ১৬ টাকা বাড়ালো সরকার

ডেইলি নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফর ডটকম:  আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমবর্ধমান মূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৬ টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা, যা আগে ছিল ১০৪ টাকা। আর প্যাকেটজাত পরিশোধিত চিনির দাম কেজি প্রতি ১০৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৫ টাকা করা হয়েছে। চিনি পরিশোধনকারীরা নতুন এই দামে চিনি বিক্রি করার অনুমতি পেলো।

এদিকে বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি হওয়া, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও দেশে বাড়তি পরিবহন খরচের জন্য চিনির দাম বাড়ছে। তাছাড়া চিনির একটু ঘাটতি আছে বলে খবর পেয়েছি।

সচিব বলেন, চিনির জন্য শুল্ক কমানো হয়েছে। কমানোর পরও দাম অতটা কমানো যাচ্ছে না। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে, পাশাপাশি বেড়েছে ডলারের দামও। এ ছাড়া দেশের মধ্যে পরিবহন খরচও কিছু বেড়ে গেছে। এর কারণেই দামে প্রভাব পড়ছে। তবে এ বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দেখছে।

চিনির জন্য যে ট্যারিফ হার কমানো হয়েছে, সেটি ৩১শে মে পর্যন্ত বহাল আছে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, ‘ট্যারিফ হার আরও কমানোর জন্য এনবিআরকে চিঠি দেয়া হবে। কারণ, গত বছরের তুলনায় চিনির দাম অনেক বেড়ে গেছে।

তবে এনবিআর স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা করে দেখবে যে রাজস্ব ঘাটতি কতটা। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকে। রাজস্ব আদায় না হলে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করেই তারা সিদ্ধান্ত নেবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্যারিফ নির্ধারণের বিষয়টি এনবিআর দেখে থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি বেড়ে গেলে এনবিআরকে শুল্ক কমানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। এনবিআর পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন সময় শুল্ক কমিয়ে থাকে।

এদিকে বাজারে রমজানের আগে থেকেই আমদানির ক্ষেত্রে চিনির কিছুটা ঘাটতি ছিল উল্লেখ করে সচিব বলেন, ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হবে। তবে চিনিবাহী কত জাহাজ দেশে এসেছে, সে বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশনের চিনির দাম বাড়ানোর দাবি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সুপারিশ করেছে বলে জানান তপন কান্তি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম অনেক বেড়েছে। সে জন্য এসোসিয়েশন দাম বাড়ানোর দাবি করেছে। তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের অভিন্ন নির্ধারণ পদ্ধতি অনুযায়ী ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন হিসাব করে দেখেছে, এসোসিয়েশনের দাবি অনুযায়ী দাম সমন্বয় করা সম্ভব নয়। তবে খোলা চিনি ১০৪ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১০৯ টাকার জায়গায় সর্বোচ্চ ১২০ টাকা ও ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে বিপণন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নতুন এ দাম কার্যকরে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান সচিব। তিনি বলেন, গত সোমবার (৮ই মে) এসোসিয়েশনকে নতুন দাম সুপারিশ করা হয়েছে। এখন এসোসিয়েশন নতুন দাম বাস্তবায়ন করবে কিনা, সে বিষয়ে যোগাযোগ চলছে। এ দাম বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে কাজ করবে ভোক্তা অধিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Pin It on Pinterest

Share This